জকিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাইক ভেঙে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: ভারতের বরাক নদী দিয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুরমা-কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি স্থানে ডাইক ভেঙে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল নিজগ্রামে, কাজলসার ইউপির আটগ্রামের নালুহাটি গ্রামে সুরমা নদীর ডাইক ও জকিগঞ্জ সদর ইউপির ছবড়িয়া, বাখরশাল, রারাই, খলাছড়া ইউপির নরসিংহপুর, ভূইয়ারমোড়া, বিরশ্রী ইউপির মাঝরগ্রামসহ কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন এলাকার ডাইক ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। তাছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ডাইক উপচে নদীর পানি গ্রামে ঢুকার ঢুকতে দেখা গেছে। আকস্মিক ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটে চলেছেন। অনেক এলাকায় বসতঘরে পানি ঢুকে গেছে। গৃহপালিত পশু পাখি নিয়ে লোকজন বেকায়দায় পড়েছেন। কেউ কেউ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ পানিবন্দি অবস্থায় বাড়িতেই অবস্থান করছেন। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মানুষজন বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি হু হু করে বাড়ছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সময় সময় জকিগঞ্জের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক এলাকায় ডাইকের ওপরে বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে ডাইক রক্ষার চেষ্ঠা চালাচ্ছেন এলাকাবাসী।

বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণে ডাইক ভেঙে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ডাইকের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে মেরামত করা হলে বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব ছিলো।

এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসনিম জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে প্রধান করে উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মোট ৫৫ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। তবে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ২২ টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য ৩২ মেট্রিক টন চাল ও ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ এসেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন সর্তক রয়েছে। পানিবন্দি এলাকার লোকজন যেকোন তথ্য উপজেলা বন্যা কন্ট্রোল রুমে জানানোর জন্য তিনি অনুরোধ করেন।

এদিকে, প্রায় চারদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। এ কারণে কোথাও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলেও মোবাইল ফোনে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্টদের জানাতে পারছেন না এলাকাবাসী। মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে গ্রাম এলাকার সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। অন্যদিকে, বিদ্যুৎতের দাবীতে বুধবার রাতে উপজেলার বারঠাকুরীতে সড়ক অবরোধ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. মোতাছিম বিল্লাহ’র সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

 

বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জানতে এই পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন।

বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জানতে এই পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর